ক্রেডিট কার্ড কি | ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার | কিভাবে পাবেন

ক্রেডিট কার্ড কি

অনেকেই অনেক প্রয়োজনে ক্রেডিট কার্ড কি, কিভাবে নিতে হয়, কারা নিতে পারবেন? এই বিষয়গুলো জানতে চান। আজকে আমরা ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এই লেখাটি ভালো করে পড়লে আপনার বোঝতে অসুবিধা হবে না ক্রেডিট কার্ড কি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য কি।

ক্রেডিট কার্ড কি

ক্রেডিট কার্ড হলো ব্যাংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি ফিজিক্যাল কার্ড। প্লাস্টিক বা মেটালের কার্ড যা কার্ডধারীকে একটি নির্দিষ্ট ক্রেডিট সীমা পর্যন্ত পণ্য ও সেবা ক্রয় করার অনুমতি দেয়। কার্ডধারী ক্রয়ের সময় টাকা পরিশোধ করে না, বরং ঋণ নেয় এবং পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করে।

তবে যে কেউ চাইলেই ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন না। আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারলে তবেই ব্যাংক আপনাকে ক্রেডিট কার্ড দেবে। অর্থাৎ, বিশেষ কিছু যোগ্যতার প্রমাণ দেখাতে পারলেই ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যাবে।

ক্রেডিট কার্ড এর ধরন:

বিভিন্ন ধরণের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, প্রতিটির নিজস্ব অনন্য বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে সাধারণ ধরণের মধ্যে রয়েছে:

  • পারচেজ কার্ড,
  • মানি ট্রান্সফার কার্ড,
  • রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড,
  • ক্রেডিট বিল্ডার কার্ড,
  • ওভারসিস কার্ড

ক্রেডিট কার্ডের ইতিহাস

ক্রেডিট কার্ডের ধারণাটি প্রথম উনিশ শতকের শেষের দিকে দেখা দেয়। তবে, আধুনিক ক্রেডিট কার্ডের উত্থান ঘটে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে।

১৯২০ সালের দিকে:

  • ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এবং তেল কোম্পানিগুলো তাদের “ভালো” গ্রাহকদের জন্য “কার্টেসি কার্ড” চালু করে।
  • এই কার্ডগুলি ধাতু বা কাগজের তৈরি ছিল এবং ক্রেডিট সীমা ছিল সীমিত।

১৯৩৪ সালে:

  • “আমেরিকান এয়ারলাইনস” এবং “এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন” “বাই নাউ অ্যান্ড পে লেটার” (এখন কেনা, পরে পরিশোধ) নীতির মাধ্যমে “এয়ার ট্রাভেল কার্ড” চালু করে।

১৯৪৯ সালে:

ফ্রাঙ্ক ম্যাকনামারা নামে এক ব্যবসায়ী ভুল করে ওয়ালেট ছাড়াই একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান।তিনি রেস্তোরাঁর সাথে একটি চুক্তি করেন যেখানে তিনি পরে বিল পরিশোধ করবেন। এই ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, ম্যাকনামারা “দ্য চারগা-প্লেট” নামে একটি ধাতব ক্রেডিট কার্ড তৈরি করেন।

১৯৫০ এবং ১৯৬০ সালের দিকে:

  • ব্যাংকগুলি ক্রেডিট কার্ড বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে।
  • “ডাইনার্স ক্লাব”, “আমেরিকান এক্সপ্রেস”, “মাস্টারকার্ড” এবং “ভিসা” এর মতো জনপ্রিয় ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

এবং আজকের দিনে:

  • ক্রেডিট কার্ড বিশ্বজুড়ে একটি জনপ্রিয় লেনদেন পদ্ধতি।
  • বিভিন্ন ধরণের ক্রেডিট কার্ড উপলব্ধ, যেমন রিওয়ার্ড কার্ড, স্টুডেন্ট কার্ড, এবং ব্যবসায়িক কার্ড।
  • ক্রেডিট কার্ড প্রযুক্তি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে, যেমন চিপ এবং পিন, কন্টাক্টলেস পেমেন্ট, এবং মোবাইল ওয়ালেট।

আশাকরি উপরের লেখা থেকে ক্রেডিট কার্ডের ইতিহাস জানতে পেরেছেন। নিচের অধ্যায় আমরা আলোচনা করবো ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা কি।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা:

আধুনিক জীবনে ক্রেডিট কার্ড হয়ে উঠেছে এক অপরিহার্য সঙ্গী। নগদ টাকার বহন ঝুঁকি এড়াতে, দ্রুত লেনদেন করতে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও অফার উপভোগ করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা নিচে দেওয়া হল:

দ্রুত লেনদেন:

  • বড় ধরনের কেনাকাটার জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন হয় না।
  • কার্ড সোয়াইপ করে দ্রুত পেমেন্ট করা যায়।
  • অনলাইন কেনাকাটায় সহজে ব্যবহার করা যায়।

সুরক্ষা:

  • নগদ টাকা হারানোর ঝুঁকি কম থাকে।
  • কার্ড চুরি হলে অ্যাকাউন্ট ব্লক করে অর্থ রক্ষা করা যায়।
  • অনেক কার্ডে বীমা সুবিধা থাকে।

ঋণের সুবিধা:

  • ক্রেডিট লিমিটের মধ্যে ঋণ নেওয়া যায়।
  • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করলে সুদ দিতে হয় না।
  • ঋণ পরিশোধের মাধ্যমে ক্রেডিট স্কোর তৈরি করা যায়।

রিওয়ার্ড ও অফার:

  • কেনাকাটার উপর রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট
  • বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার পাওয়া যায়।

ভ্রমণ সুবিধা:

  • বিদেশ ভ্রমণে কার্ড ব্যবহার করে সহজে লেনদেন করা যায়।
  • অনেক কার্ডে বিমান টিকিট, হোটেল বুকিং-এ ছাড় পাওয়া যায়।

আর্থিক নিয়ন্ত্রণ:

  • কার্ডের মাধ্যমে খরচের হিসাব রাখা সহজ।
  • কার্ডের ব্যবহারের বিবরণ মোবাইল অ্যাপে দেখা যায়।

জরুরি প্রয়োজনে:

  • জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত অর্থের ব্যবস্থা করা যায়।
  • কার্ডের মাধ্যমে এটিএম থেকে নগদ টাকা তোলা যায়।

সুবিধাজনক:

  • বহন করা সহজ।
  • বিভিন্ন দোকান ও প্রতিষ্ঠানে কার্ড ব্যবহার করা যায়।

অতিরিক্ত সুবিধা:

  • অনেক কার্ডে বিভিন্ন ধরণের অতিরিক্ত সুবিধা থাকে, যেমন:
    • লাউঞ্জ অ্যাক্সেস
    • লাইফস্টাইল সুবিধা
    • বিমা সুবিধা

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। তবে সচেতনভাবে ব্যবহার না করলে ঝুঁকিতেও পড়তে পারেন। সুবিধা ও অসুবিধা ভালোভাবে বুঝে ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড আপনার জীবনযাত্রাকে আরও সহজ ও সুবিধাজনক করে তুলতে পারে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা:

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে, অসুবিধাগুলো কি কি তা নিচে দেওয়া হল।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু উল্লেখযোগ্য অসুবিধা:

ঋণের ফাঁদ:

  • সময়মত ঋণ পরিশোধ না করলে উচ্চ হারে সুদ দিতে হয়।
  • ঋণের বোঝা বেড়ে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে পারেন।

অতিরিক্ত খরচ:

  • কার্ড ব্যবহারে বিভিন্ন ফি, যেমন:
    • বার্ষিক ফি
    • লেনদেন ফি
    • নগদ অগ্রিম ফি
    • বিলম্ব ফি
  • অতিরিক্ত খরচের ফলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।

নিরাপত্তা ঝুঁকি:

  • কার্ড চুরি বা হারিয়ে গেলে অর্থের ক্ষতি হতে পারে।
  • অনলাইন লেনদেনে প্রতারণার শিকার হতে পারেন।

ক্রেডিট স্কোরের উপর প্রভাব:

  • সময়মত ঋণ পরিশোধ না করলে ক্রেডিট স্কোর কমে যায়।
  • কম ক্রেডিট স্কোরের ফলে ঋণ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

আবেগপ্রবণ খরচ:

  • কার্ড ব্যবহারে সহজলভ্যতার কারণে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার প্রবণতা বেড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত খরচের ফলে আর্থিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সকল প্রতিষ্ঠানে গ্রহণযোগ্যতা না থাকা:

  • সকল দোকান ও প্রতিষ্ঠানে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করা হয় না।
  • ছোটখাটো কেনাকাটার জন্য কার্ড ব্যবহার করা অসুবিধাজনক হতে পারে।

অতিরিক্ত সুবিধার জন্য খরচ:

  • কার্ডের কিছু অতিরিক্ত সুবিধার জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হয়।
  • সকলের জন্য এই সুবিধাগুলি প্রয়োজনীয় নাও হতে পারে।

মানসিক চাপ:

  • ঋণের বোঝা ও সুদ পরিশোধের চাপ মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ফলে মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব:

  • অতিরিক্ত খরচ ও ঋণের বোঝা দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • ভবিষ্যতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

উপরের লেখা থেকে জানতে পারলেন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা কি কি ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে অসুবিধাগুলো যেনে রাখা জরুরি।

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য:

আধুনিক জীবনে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দুটিই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। নগদ টাকার বহন ঝুঁকি এড়াতে এবং দ্রুত লেনদেনের জন্য এগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে এ দুটি কার্ডের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে, যা আপনি ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে জানা জরুরি।

ডেবিট কার্ড:

  • আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে।
  • কেনাকাটার সময় আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি টাকা কেটে নেওয়া হয়।
  • ঋণের সুযোগ নেই।
  • অতিরিক্ত খরচের সম্ভাবনা কম।
  • ব্যবহারে সহজ এবং নিয়ন্ত্রণ করা সহজ।

ক্রেডিট কার্ড:

  • ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি নির্দিষ্ট ঋণ সীমা (ক্রেডিট লিমিট) প্রদান করা হয়।
  • কেনাকাটার সময় ব্যাংক ঋণ প্রদান করে, পরবর্তীতে তা পরিশোধ করতে হয়।
  • ঋণের উপর সুদ প্রযোজ্য।
  • রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট
  • ঝুঁকিপূর্ণ, অতিরিক্ত খরচের সম্ভাবনা বেশি।

কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত?

  • আপনি যদি নিয়ন্ত্রিত খরচে বিশ্বাসী হন এবং ঋণের ঝুঁকি এড়াতে চান, ডেবিট কার্ড আপনার জন্য উপযুক্ত।
  • আপনি যদি রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট
  • দ্রুত ঋণের প্রয়োজন হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা বুঝে আপনার জন্য কোনটি উপযুক্ত তা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে এগুলো আপনার আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ ও সুবিধাজনক করে তুলতে পারে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার:

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার নির্ধারণ করে বলা সম্ভব নয় কারণ এটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে ও ব্যাংক ভেদে আলাদা আলাদা হতে পারে, যেমন:

  • ব্যাংক: প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব সুদের হার নীতিমালা থাকে।
  • ক্রেডিট কার্ডের ধরণ: বিভিন্ন ধরণের ক্রেডিট কার্ডের (যেমন: স্ট্যান্ডার্ড, প্রিমিয়াম, ট্রাভেল) জন্য ভিন্ন সুদের হার প্রযোজ্য।
  • গ্রাহকের প্রোফাইল: গ্রাহকের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও ক্রেডিট স্কোরের উপর নির্ভর করে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়।

বর্তমান বাজারে সুদের হার:

  • সর্বনিম্ন সুদের হার: ৯%
  • সর্বোচ্চ সুদের হার: ৩০%
  • বেশিরভাগ কার্ডের সুদের হার: ১২% থেকে ২৫%

ব্যাংক ভেদে এই সুদের হার কমবেশি হতে পারে। আপনি কোন নির্দিষ্ট ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা:

ক্রেডিট কার্ড এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। কেনাকাটা থেকে শুরু করে ভ্রমণ, সবকিছুতেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু যে কেউ চাইলেই ক্রেডিট কার্ড পেয়ে যাবে না। ব্যাংক কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য সাধারণ যোগ্যতাগুলো হল:

বয়স: ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার জন্য আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।

আয়: আপনার নিয়মিত আয়ের উৎস থাকতে হবে। ব্যাংক আপনার আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ডের সীমা নির্ধারণ করবে এবং ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে।

কর্মসংস্থান: চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে, ন্যূনতম ৬ মাসের কর্ম অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে, ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এবং আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।

ক্রেডিট স্কোর: ক্রেডিট স্কোর হলো আপনার ঋণ পরিশোধের ইতিহাসের একটি সংখ্যাসূচক প্রকাশ। ভালো ক্রেডিট স্কোর থাকলে ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ঋণের পরিমাণ: আপনার বিদ্যমান ঋণের পরিমাণ আপনার আয়ের অনুপাতে কতটুকু, তা ব্যাংক বিবেচনা করে।

ঠিকানা: আপনার স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা প্রদান করতে হবে।

কাগজপত্র: আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আয়ের প্রমাণপত্র (বেতন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি) এবং ঠিকানার প্রমাণপত্র (বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল ইত্যাদি) জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড:

প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী কার্ড নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের অফারগুলো তুলনা করে বিভিন্ন ব্যাংক এই ক্রেডিট কার্ড সেবা দেয়। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের সেবা বেশ জনপ্রিয়, তা নিচে দেওয়া হল—

ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি

ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে ক্রেডিট কার্ড সেকশনে ছয়টি ভিন্ন অফারের কার্ড পাওয়া যাবে। লার্ন মোরে ক্লিক করে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধাগুলো জানতে পারবেন। নিচে থাকবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে, কার্ডের ফি ও অ্যাপ্লাই নাও বাটন। অ্যাপ্লাই বাটনে ক্লিক করে কয়েকটি তথ্য সাবমিট করলে ব্যাংক আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

সিটি ব্যাংক পিএলসি

ক্রেডিট কার্ড সার্ভিসেস সেকশনে গিয়ে ডাউনলোড ফরমসে ক্লিক করুন। এরপর দুই পৃষ্ঠার একটি ফরম ডাউনলোড হলে তা পূরণ করে ব্যাংকে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। ফরমের ঠিক নিচেই থাকবে কার্ড-সংক্রান্ত ফি ও কি কাগজপত্র লাগবে তার বিস্তারিত। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক পিএলসি

ক্রেডিট কার্ডে সেকশনে গিয়ে অ্যাপ্লাই নাও লেখাতে ক্লিক করতে হবে। তারপর নাম, যোগাযোগের তথ্য, শহর, মেইল ঠিকানা দিয়ে ‘Okay Next’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। আপনার তথ্য সাবমিট হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। 

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক পিএলসি

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকে ১০ ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এগুলো হলো মাস্টারকার্ড টাইটেনিয়াম, ভিসা প্লাটিনাম, ভিসা ক্ল্যাসিক লোকাল, ভিসা গোল্ড লোকাল, ভিসা ক্ল্যাসিক ইন্টারন্যাশনাল, ভিসা গোল্ড ইন্টারন্যাশনাল, ভিসা গোল্ড ক্ল্যাসিক ইন্টারন্যাশনাল, মাস্টারকার্ড গোল্ড ইন্টারন্যাশনাল, মাস্টারকার্ড ক্ল্যাসিক লোকাল, মাস্টারকার্ড গোল্ড লোকাল, মাস্টারকার্ড ক্ল্যাসিক ইন্টারন্যাশনাল।

এগুলোর যেকোন একটি কার্ডের উপরে ওপরে ক্লিক করলে কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। কার্ডের বিস্তারিত জেনে Apply বাটনে ক্লিক করুন। এতে ক্রেডিট কার্ড অ্যাপ্লিকেশন ফরম ডাউনলোড করা যাবে। ফরম পূরণ করে ব্যাংকে জমা দিতে হবে। 

প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি

প্রিমিয়াম ব্যাংকের চার ধরনের ক্রেডিট কার্ড আছে। কার্ডের নিচে Learn More বাটনে ক্লিক করে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করুন। 

উপরের এই তালিকাটি কেবলমাত্র কয়েকটি জনপ্রিয় ব্যংকের ক্রেডিট কার্ডের। আপনার প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী কার্ড নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা, অসুবিধাগুলো এবং অফারগুলো যাচাই করে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করবেন।

শেষকথাঃ

আশাকরি আজকের লেখা থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন ক্রেডিট কি এর সুবিধা অসুবিধা কি কি। উপরের বর্ণিত তথ্যগুলো আমি বিভিন্ন ব্যঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে নিয়েছি এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।

সুদের হার সহ অনান্য বিষয়গুলো পরিবর্তিত হতে পারে। এবং শুধুমাত্র আপনাদের ধারনা দেওয়ার জন্যই লিখেছি। আপনাদের কোনকিছু বোঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। লেখাটি ইনফরম্যাটিভ মনে হলে শেয়ার করে ইনফোবাজ এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *